Friday, October 12, 2018

গাঊছে ছাকালাঈন

গাঊছে ছাকালান বা গাঊছে ছাকালাঈন। ‘গাঊছ’ অর্থ সাহায্যকারী। ছাকালান অর্থ বড় দুটি সম্মানিত দল, কর্মরূপে এটি ছাকালাঈন হয়। ছাকালান বা ছাকালাইন বলে জিন-ইনসানকেই বোঝানো হয়। শব্দটি দ্বি-বচন, কখনও দ্বি-বচন দ্বারা বহুবচনও বোঝানো হয়; তখন এর অর্থ হয় সৃষ্টিসকল। এই শব্দটি কোরআনেও রয়েছে : ‘হে জিন ও মানব জাতি! অচিরেই আমি তোমাদের প্রতি মনোবিবেশ করব।’ (সূরা-৫৫ আর-রহমান, আয়াত : ৩১)। যেহেতু জিন ও ইনসান সৃষ্টির মধ্যে সম্মানিত ও পরকালে তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত ও জাহান্নাম, তাই এদের আলাদা করে ছাকালান বা ছাকালাঈন অর্থাৎ বড় দুটি দল নামে অভিহিত করা হয়। (লিসানুল আরব, ইবনে মানযূর রহ., খ-: ২, পৃষ্ঠা : ১১২-১১৫, অধ্যায় : ছা)।
সাধারণ আরবিতে ছাকালান এবং উর্দু-ফারসিতে ছাকালাঈন ব্যবহৃত হয়। গাঊছে ছাকালান বা গাঊছে ছাকালাঈন অর্থ দুই দলের সাহায্যকারী বা সবার সহায্যকারী। এর আরবি রূপ হলো ‘গাঊছুছ ছাকালাঈন’; ফারসি, উর্দু ও বাংলায় গাউছে ছাকালাঈন। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বানানে ও উচ্চারণে বিভিন্নতা দেখা যায়। যেমনÑ গঊছে ছাকলাঈন, গাউসে সাকলাঈন; গঊছে ছাকলাইন, গাউসে সাকলাইন, গঊছে ছাকলায়েন, গাউসে সাকলায়ন ইত্যাদি।
যারা আল্লাহর পক্ষ থেকে জিন ও ইনসানের প্রতি এবং ক্ষেত্র বিশেষ এর বাইরেও অন্যান্য সৃষ্টির প্রতি গাউছের দায়িত্ব পালন করেন, তারা এই সম্মানজনক অভিধায় অভিহিত হন। তরিকতের পরিভাষায় ‘গাঊছে ছাকালাঈন’ হলেন মারিফাত ও তাসাউফের সালিকীনদের সাতাশ বা ঊনত্রিশ স্তরের অন্যতম এবং মাজমুআয়ে উছমানীতে বর্ণিত ইনছানের বিয়াল্লিশ পর্বের অন্তর্গত বিলায়াত ও খিলাফাতের পঞ্চবিংশতিতম ধাপ বা বিশেষ স্তর। এই পর্যায়ের ওলি-আউলিয়গণ আল্লাহর পক্ষ থেকে ‘গাউছুল আযম’ এর অধীনে বিশেষ ক্ষমতা ও কর্তৃত্বপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন। গাঊছে ছাকালাঈনও মূলত কুতবুল আকতাবের সমপর্যায়ের হয়ে থাকেন। এই ওলি-আউলিয়াগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে কারামাত ও তাছাররুফাতের অধিকারীও হন। একই সময়ে একাধিক গাঊছে ছাকালাঈন হতেও পারেন। (মাজমুআয়ে উছমানী)।

No comments:

Post a Comment