সুলতানুল আরেফিন হযরত বায়েজিদ বোস্তামি (রহঃ)।
তিনশ ষাট আউলিয়ার দেশ বললে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণের সিলেট বিভাগকে বুঝে নেয়া হয়। আবার বারো আউলিয়ার দেশ বললে চট্টগ্রাম অঞ্চল বুঝি। এই বারো আউলিয়ার অন্যতম হচ্ছেন সুলতানুল আরেফিন হযরত বায়েজিদ বোস্তামি (রহঃ)।ইতিহাস ভিত্তিক সুদৃঢ় প্রমাণ না পাওয়া গেলেও কথিত আছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আমাদের চট্টগ্রামে আসেন সুফি সাধক, জ্ঞানী, কুরআনের শিক্ষায় আলোকিত হযরত বায়োজিদ বোস্তামি (রাহ.)। বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষদের আসা যাওয়া আছে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এর এক পাহাড়ের উপর অবস্থিত একটি পাহাড়ে যা পরবর্তীতে বায়েজিদ বোস্তামির মাজার নামেই এক কথায় পরিচিত। প্রকৃত অর্থে বায়েজিদ বোস্তামি (রাহ.) এই অঞ্চলে এসেছিলেন কি না তার কোনো ঐতিহাসিক সত্যতা পাওয়া না গেলেও যুগে যুগে বহু মানুষের স্থির বিশ্বাস বায়েজিদ বোস্তামি বাংলাদেশে আগমন করেছিলেন। তবে এ কথা সত্য যে, খ্রীস্টিয় অষ্টম শতাব্দীতে আমাদের এ অঞ্চলে আরব ব্যবসায়ীদের আসা যাওয়া ছিলো। সে বিবেচনায় পরবর্তী কোনো এক সময়ে চট্টগ্রাম উপকূলে বায়েজিদ বোস্তামির আগমন ঘটে থাকতে পারে। জনশ্রুতি আছে, বায়েজিদ বোস্তামি চট্টগ্রাম এসেছিলেন ঠিকই। তবে তিনি এখানে স্থায়ী আবাস গড়ে তোলেন নি।
তবে এই কথা সত্যযে,যে সকল ধর্মপ্রাণ মনীষী দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আমাদের এই বাংলা ভূমিতে এসেছেন, যুগে যুগে শান্তির বার্তা নিয়ে ইসলাম ধর্মের প্রচারের জন্য এবং যাদের কঠোর সাধনায় দিনে দিনে তা প্রসার লাভ করেছে, তাদেরই একজন হচ্ছেন আদর্শ পুরুষ সুলতানুল আরেফিন হযরত বায়েজিদ বোস্তামি (রাহঃ) বায়েজিদ কেমন করে বায়েজিদ বোস্তামি হলেন? তাঁর জন্ম বৃত্তান্ত খুঁজতে গিয়ে জানা গেল, তিনি ইরান দেশের বড় এক শহর তেহরানের পার্শ্ববর্তী কুমিস নামক প্রদেশের অন্তর্গত খোরাসানের প্রসিদ্ধ শহর বোস্তাম নামের এক এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। হিজরি ১২৮ সনে এবং ৭৪৫ খ্রিস্টিয় সালে জন্মগ্রহণকারী এই মহান ব্যক্তির জন্মস্থান বোস্তাম হওয়াতে তাঁর নামের সাথে বোস্তামি শব্দ সংযোজিত হয়েছে। অতীতকালে বিখ্যাত ব্যক্তিদের নামের সাথে জন্মস্থানের নাম সহজ পরিচয়ের সুবিধার্থে জুড়ে দেয়া হতো। এখনও আমাদের বর্তমান সময়ের ধর্মীয় অনেক বক্তার নামের সাথে তাঁদের নিজ নিজ এলাকার নামের ব্যবহার চোখে পড়ে।
বায়েজিদ বোস্তামির মূল নাম তায়ফুর। আর ইয়াজিদ তাঁর উপনাম। নামটি কালক্রমে বায়েজিদ হয়ে যায়। তাঁর পিতার নাম ঈসা এবং তিনি তাবেয়িনদের সাক্ষাতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন বলে তাকে তাবে তাবেইন বলা হয়ে থাকে। তবে তাঁর পিতামহ প্রথম জীবনে মুসলমান ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন অগ্নি পূজারী এবং পরবর্তীতে কোনো এক ইসলাম ধর্ম প্রচারকের সান্নিধ্য পেয়ে ইসলাম ধর্ম কবুল করেন। বায়েজিদ বোস্তামির মাতা ছিলেন একজন ধৈর্য্যশীলা এবং চরিত্রে উন্নত মহিলা একথা সর্বজন স্বীকৃত। সৎ পিতা মাতার প্রভাবে প্রভাবিত যোগ্য সন্তান হচ্ছেন বায়েজিদ যিনি সুফি সাধক ছিলেন। হযরত বায়েজিদ বোস্তামি (রাহঃ) এর মাতৃভক্তির ঘটনা দুনিয়া জোড়া খ্যাতি অর্জন করেছে। সেই জানা সত্য ঘটনাটি সকল সময় প্রচার হওয়া জরুরি মনে করি।
কোনো এক রাতে বায়েজিদ বোস্তামির মা ঘুম থেকে জেগে উঠে ছেলের কাছে পানি পান করতে চাইলেন। বায়েজিদ বোস্তামি তখনও বালক। তিনি পানি আনতে গিয়ে দেখলেন ঘরের কলসিতে পানি নেই। তাই তিনি তখন মায়ের পানির তৃষ্ণা মিটাতে গভীর রাতেই ছুটে গেছেন দূরের কোনো ঝর্ণাধারা থেকে পানি আনতে। সেদিন ঘুটঘুটে অন্ধকার রাতে বনজঙ্গল পাড়ি দিয়ে দূর থেকে পানি নিয়ে এসে দেখে তাঁর মা আর জেগে নেই, ঘুমিয়ে পড়েছেন। তিনি ভাবলেন ঘুম থেকে মাকে জাগানো ঠিক হবে না। মায়ের কষ্ট হবে। আবার এও ভাবলেন, যদি হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে মা আবার পানির জন্য ডাকেন। তাই তিনি নিজে না ঘুমিয়ে মায়ের শিয়রের কাছে পানি ভর্তি গ্লাস নিয়ে বাকি রাতটুকু দাঁড়িয়ে ছিলেন। শীতের রাত ছিলো। রাত শেষে সকাল হলো। মা জেগে দেখেন তাঁর সন্তান পানির গ্লাস হাতে তখনও দাঁড়িয়ে। মায়ের প্রতি সন্তানের এমন ভক্তি ও ভালোবাসা দেখে মা আবেগে কেঁদে ফেলেন এবং মহান আল্লাহর দরবারে ছেলেকে নেক বান্দা হিসাবে কবুল করার জন্য দোয়া করেন। মায়ের দোয়ার কারণেই আল্লাহ তায়ালার অশেষ দয়ায় পরবর্তী জীবনে বায়েজিদ বোস্তামি বিশ্বে স্মরণীয় এবং বরণীয় এক মহান আউলিয়া হয়েছিলেন। তিনিই হচ্ছেন আমাদের এক পথ প্রদর্শক হযরত বায়েজিদ বোস্তামি (রাহঃ)।
হজরত বায়েজিদ বোস্তামির (রহঃ) পিতা-মাতা ছোটবেলা থেকেই তার বিদ্যা শিক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেন। তারা তার জন্য বাসায় কয়েকজন শিক্ষক নিয়োগ করেন। তার পিতাও তাকে শিক্ষাদান করান। তার বয়স বাড়ার সাথে সাথে শুধু গৃহশিক্ষকের ওপর নির্ভর করতে না পারায় তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেয়া হয়। এর মধ্যে তার পিতা মৃত্যুবরণ করেন। তবে তার মাতা ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে তিনি বিচলিত হননি। তার পরিবারে আর্থিক অবস্থা মোটামুটি সচ্ছল ছিল। তাই পিতার অকালমৃত্যু তার শিক্ষাজীবনে কোন বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তাই মাদ্রাসায় তিনি সহজেই শিক্ষকদের সুনজরে পড়েন। একদিন তিনি বাড়ি গিয়ে তার মাকে বললেন, আল্লাহর খেদমতে আমায় ছেড়ে দিতে হবে। আমি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর গোলাম হব। মা বললেন, আমি তোমাকে আল্লাহর খেদমতে ছেড়ে দিলাম। তারপর তিনি মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যান ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করার জন্য। উচ্চ মাকাম অর্জনের জন্য ১১৩ জন বিশিষ্ট শিক্ষকের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা লাভ করেন। তার বিশিষ্ট শিক্ষকের মধ্যে হজরত ইমাম সাদিক (রহঃ) ও হজরত শফিক বলখি (রহ) ছিলেন অন্যতম।
হজরত বায়েজিদ বোস্তামি (রহ) ৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ১৩১ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং বোস্তাম শহরে তাকে দাফন করা হয়। বিশ্বের সকল অঞ্চল থেকে আজও মুসলিম দর্শনার্থীরা তার মাজার জিয়ারত করার জন্য বোস্তাম শহরে যান।
--------------------------💝🌿🌿💝-----------------------
#এক_নজরে_হযরত_বায়েজীদ_বোস্তামী (রহঃ)
√ নামঃ আবু ইয়াযিদ তাইফুর
ইবনে ঈসা ইবনে সুরূশান আল বোস্তামী (রহঃ) ।
ইমাম যাহবী রহঃ এর বর্ণনা মতে,
আবু ইয়াযিদ তাইফুর ইবনে ঈসা ইবনে আদম
ইবনে ঈসা ইবনে আলী আল বোস্তামী ।
√ পিতাঃ হযরত ঈসা বোস্তামী (রহঃ)।
তিনি তবে তাবেঈন ছিলেন ।
√ তিন ভাইঃ আদম, বায়েজীদ, আলী ।সকলেই
ছিলেন আবেদ ও তাপস ।
√ জন্মঃ হযরত বায়েজীদ
বোস্তামী রহঃ ১২৮ হিজরী, ৭৪৫
খ্রিষ্টব্দে কোনো এক শুভক্ষণে জন্মগ্রহণ
করেন । অপর এক বর্ণনামতে তাঁর জন্মসাল
১৮৮ হিজরী । তবে প্রথমটিই
বেশি গ্রহণযোগ্য ।
√ জন্মস্থানঃ হযরত বায়েজীদ
বোস্তামী রহঃ বর্তমান ইরানের কুমিস
প্রদেশের অন্তর্গত খোরাসানের এক প্রসিদ্ধ
শহর বোস্তামের মোবদান এলাকায় জন্মগ্রহণ
করেন ।
√ উপাধিসমূহঃ
সুলতানুল আরেফীন ।সায়্যিদুত তারেকীন ।
বোরহানুল আশেকীন ।ইমামুল ওয়াসেলীন ।
সায়্যিদুল আসফিয়া ।
আরো অনেক উপাধি রয়েছে ।
√ শিক্ষা জীবনঃ তিনি নিজ আলেম পিতা ও
মক্তবে পবিত্র কোরআন শিক্ষা ও অন্যান্য
প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন ।
পরে তিনি উচ্চ
শিক্ষা লাভের জন্য শামসহ বিভিন্ন
দেশে গিয়ে দীর্ঘ তিন বছরে প্রায় ১৭০ জন
যুগবিখ্যাত মুহাদ্দেসীন, ফোকাহা ও
উলামা মাশায়েখের সান্নিধ্যে গিয়ে কোরআন
হাদীসসহ শরীয়তের বিভিন্ন শাখা উপশাখায়
গভীর জ্ঞাণার্জন করেন ।
পাশাপাশি তিনি মারেফাত ও সূফীততত্ত্বের
অনেক গূঢ রহস্য সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করেন ।
√ তরীকতের দীক্ষা ও বায়আত
গ্রহণঃ তিনি বেলায়তের মহান
উচ্চাসনে আসীন হয়েও তরীকতের দীক্ষা নেন
ও বায়আত গ্রহণ করেন ।তার প্রধান পীর
মুর্শিদ হিসেবে যার নাম বিশষ উল্লেখযোগ্য
তিনি হলেন, আলে রাসূল দঃ হযরত সৈয়্যদ
ইমাম জাফর সাদেক রাঃ ।
√ কারামতঃ তার অসংখ্য অগণিত কারামত
রয়েছে ,যার বেশ কয়েকটি নিম্নে বর্ণিত কিতাবে উল্লেখ আছে ।
√ ইন্তেকালঃ অধিকাংশ গ্রহণযোগ্য
মতে মহান এই সুফীসাধক ২৬১ হিজরী,
৮৭৪খ্রিঃ ইন্তেকাল করেন ।অপর এক
বর্ণনামতে ২৩৪হিজরীতে ইন্তেকাল করেন ।
ইন্তেকালে তার বয়স নিয়েও বিভিন্ন মতামত
পাওয়া যায় ।এক বর্ণনা মতে ৭৩, অন্য
বর্ণনায় ১০৬, আরেক বর্ণনায় ১৩১ বছর ।
আরবী সনের শাবান মাসের ১১ বা ১৪
বা ১৫ তারিখে তার ইন্তেকাল হয় ।
[ সূত্রঃ হযরত বায়েজীদ বোস্তামী রহঃ ও
তাঁর দরগাহ শরীফ, কৃত সৈয়্যদ মুহাম্মদ
আজিজুর রহমান । ]
💐🌸💐
#নসীহত_বা_বানী_ও_মোনাজাত
🌻১/হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহঃ) কে প্রশ্ন করা হলো "আরশ কি ?" :
হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহঃ) উত্তর দিলেন " আরশ আমি নিজেই"
🌻২/ তিনি বলেন ''' আল্লাহর যিকির করতে করতে এক রাতে আমি নিজের মনকে তালাশ করতে লাগলাম কিন্তু পেলাম না। ভোররাতে শুনতে পেলামঃ ""হে বায়াযীদ, আমাকে ছাড়া অন্য বস্তুর তালাশ করছ কেন? আমাকে তালাশ করলে আবার অন্তরকে কেন তালাশ করছ?
🌻৩/ আমি দুনিয়াকে তিন তালাক দিয়ে সম্পূর্ণ এক হলাম এবং আল্লাহ পাকের দরবারে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলাম, ""হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া আমার আর কেহ নেই। তুমি যখন আমার রয়েছ তখন সবই আমার আছে।
🌻৪/আল্লাহতালা সর্বদিক প্রেমশূন্য দেখলেন, কিন্তু বায়াযীদের মস্তিষ্ক তাঁর প্রেমে পূর্ণ পেলেন।
🌻৫/ আমি রবকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার দিকের পথ কোনটি? উত্তরে বলেন, ""আমিত্ব ভাব ছেড়ে দাও, তাহলেই আমার দীদার লাভ করতে পারবে""।
🌻৬/ লোকে মৃত ব্যক্তি হতে জ্ঞান লাভ করে আর আমি এমন চিরজীবীত হতে জ্ঞান লাভ করেছি, যাঁর কখনও মৃত্যু নাই।
🌻৭/সকল লোকে আল্লাহর কালাম বলে, আর আমি আল্লাহর পক্ষ হতে বলে থাকি।
🌻৮/ আমি রিপুকে আল্লাহর প্রতি রুজু করি। সে রিপু যখন তা অস্বীকার করে, তখন আমি একাই ইলাহীর কাছে হাযির হলাম।
🌻৯/ একদিক তাঁকে প্রশ্ন করা হল,"" মানুষ কখন বুঝতে পারে যে, মা,রিফাতের গোপন তত্ত্বে পৌছতে পেরেছে?
উত্তরে বলেন, ""যখন আল্লাহর প্রেমে নিজেকে বিলীন করে দেয় ""।
🌺১০/ #মুনাজাত🌺
হে আল্লাহ! আর কতকাল আমার এবং তোমার মধ্যে "আমি" ও ""তুমি"" এ ব্যবধান থাকবে? আমার ""আমি"" আমা হতে দূর কর, তা হলে সে ""আমি"" কেবল তোমাতেই থাকব, আর কিছুই থাকবে না।
#সূত্রঃ তাযকেরাতুল আউলিয়া
সংকলন ও বিন্যাস
Adv MD Mahmud Hasan
#ছবিঃ হযরত বায়াযীদ বোস্তামী এর {রহঃ} রওজামোবারক। ইরান। বোস্তাম শহর।
______________________________________
হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহঃ) এর মা বর্ণনা করেন যে, আমার বায়েজীদ বোস্তামী অন্য দশ সন্তানের মত নয়। তাঁর কারামত আমার গর্ভে থাকাবস্তায় প্রকাশিত হয়েছে। আমি জেনে শুনে কোনদিন হারাম তথা নিষিদ্ধ খাবার এমনকি সন্দেহজনক খাবার পর্যন্ত গ্রহন করিনি। নিজের অজান্তে কোন সময় সন্দেহজনক খাবার খেলেও তবে বায়েজীদ যে দিন গর্ভে এসেছে সেদিন হতে সন্দেহজনক খাবার জেনে শুনে যেমন খাইনি, নিজের অজান্তেও খেতে পারিনি।
আমি অনেক সময় খানা মুখে দেয়ার সাথে সাথেই আমার গর্ভস্থ সন্তান বায়েজীদ নড়াচড়া শুরু করে দিত। ফলে আমার পেটের মধ্যে বেদনার উদ্রেক হত। আমি কিছু বুঝতে না পেরে চিন্তার মধ্যে পড়ে যেতাম। পেটের বেদনা সহ্য করতে না পেরে হাতের আঙ্গুল মুখের ভিতর প্রবেশ করে খানা বের করে আনতাম। কিন্তু কি আশ্চর্যের বিষয়, আমি যে মাত্র খানা বের করে নিতাম সঙ্গে সঙ্গে গভস্থ সন্তানের নড়া-চড়া বন্ধ হয়ে যেত এবং আমিও বেদনা থেকে মুক্তি পেতাম। তখন আমি নিশ্চিত হতাম, যে খানা মুখে নিয়েছি তা হারাম বা নিষিদ্ধ না হলেও তবে সন্দেহ যুক্ত ছিল যা আমি জানতাম না।
তবে আনন্দের বিষয়, আমি না জানলেও আমার গর্ভস্থ সন্তান বায়েজীদ ঠিকই অবগত ছিল। তাঁর উসিলায় আমি সন্দেহজনক খাবার থেকে রক্ষা পেয়েছি। গর্ভে থাকা কালিন সময়েও তাঁর এই কারামত ও বুযুর্গী দেখে আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করেছি।
(তথ্যসূত্রঃ তাজকিরাতুল আউলিয়া, পৃষ্ঠা-৯০ -হযরত বায়েজীদ বোস্তামী (রহঃ) ও তাঁর দরগাহ্ শরীফ, পৃষ্ঠা-১৩৭)
No comments:
Post a Comment