দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া ছিরিকোট শরিফের পীর জামেয়া ও আঞ্জুমানের প্রতিস্টাতা আওলাদে রাসুল, কুতুবে জামান, হাফেজ ক্বারি হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ ছিরিকোটি (রহঃ ) এবং উনার আওলাদ গনের ঐতিহাসিক মাইজভান্ডার দরবার জিয়ারত.........
হযরত গাউছুল আজম আহম্মদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী ওফাত প্রাপ্ত হন ১৯০৬ সালে ও হযরত গোলামুর রহমান মাইজভাণ্ডারী ওফাত প্রাপ্ত হন ১৯৩৭ সালে।
জামেয়া এবং আঞ্জুমানের প্রতিস্টাতা আওলাদে রাসুল, কুতুবুল আউলিয়া আল্লামা হাফেজ ক্বারি সৈয়্যদ আহমদ শাহ ছিরিকোটি (রহঃ ) বাংলাদেশের বার আউলিয়া পুন্যভুমি চট্টগ্রামে আসেন ১৯৪২ সালে। তৎকালীন দৈইনিক আজাদির প্রতিস্টাতা আলহাজ্ব আব্দুল খালেক ইঞ্জিনিয়ারের আমন্ত্রনে। দ্বীন ও তরিকতের প্রচার প্রসার এবং মানুষের আত্নিক উন্নয়ন সাধনে ব্রতি হযরত ছিরিকোটি (রহঃ ) ছিলেন সদা নিবেদিত প্রান।
ইঞ্জিনিয়ার সাহেবের শহরস্থ বাসা -অফিস কুহিনুর ইলেক্ট্রনিক এর দুতলায় ছিল হযরত ছিরিকোটির আস্তানা ও খানকা শরিফ। এখান থেকে তিনি পরিক্ষল্পনা করেন এই দেশের পবিত্র মাটিতে দ্বীনি শিক্ষা প্রতিস্টান গড়ে তোলার। তখন এখানে যারা আসতেন তাদের মধ্যে রাংগুনিয়ার বুড়ো মওলানা সামসুদ্দিন আহমদ চাটগামি ও আন্দরকিল্লা বাসি শেখ বজলুর রহমান। এই দুই পুরুষ জানান শাহেন শাহ ছিরিকোট আঞ্জুমান -এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া দ্বীনি সংঘটন করার পর থেকে একটা দ্বীনি প্রতিস্টান গড়ার জন্য উন্মুখ হয়ে উঠেন।
এসময় তিনি স্বপ্নে আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারীর থেকে মাইজভাণ্ডার দরবার জিয়ারতের ইশারা পান, এবং তার মহান মিশনের সাফল্যের ইংগিত লাভ করেন।
স্বপ্নে ইশারা লাভের পর হযরত ছিরিকোটি কাল বিলম্ব না করে তার সম্মানিত মুরিদদের নিয়ে ভান্ডার শরিফে যাত্রা করেন। এ সময় তাদের সাথে উপরুক্ত মুরিদরাও ছিলেন।
তাদের ভাস্য মতে নাজিরহাট গিয়েই দরবারের রাস্তারমাথায় যেতেই হযরত ছিরিকোটি গাড়ি থামিয়ে সবাইকে নেমে যেতে বলেন, সবাই নেমে পরেন। তখন হুজুর কেবলা বলেন সবাই জুতা খুলে ফেলুন। উভয় বুজুর্গ যে সামনে দাড়িয়ে আছেন।
পায়ে হেটে চলুন। উল্লেখ্য নাজিরহাট থেকে দরবার পর্যন্ত তারা পায়ে হেটে যান। এক জ্ঞানী আর এক জ্ঞানী কে চিনেন, এক বুজুর্গ আর এক বুজুর্গ কে চিনেন। সম্মান দেন এবং সম্মান নিতে যানেন।
একবার ছিরিকোটি হুজুরের এক মুরিদ উনাকে বলেন মাইজভাণ্ডার সিলসিলার মুরিদরা গান বাদ্য সহকারে মজলিশ করে এ বিষয়ে আপনি কি বলেন?? উত্তরে তিনি বলেন দেখ তিনি এই জামানার বাদশাহ আউলিয়া, হুকুমত তাহারই আমি কি বলিতে পারি??
অন্য এক মুরিদের মাইজভাণ্ডার বিষয়ক প্রশ্নে তিনি বলেন খবরদার মাইজভাণ্ডার সমর্পকে কিছু বল না বেয়াদবি হয়ে যাবে।
এখানে মহান আল্লার ওলিগন থাকেন।
হযরত ছিরিকোটি (রহঃ ) ঐ দিন
মাইজভাণ্ডার জিয়ারতের মাধ্যমে যে মর্যাদাময় সুসমর্পকের সুচনা করেন আল্লাহতায়ালার কি শান সেই সমর্পক বংশ পরম্পরায় এখন ও অব্যাহত আছে।
হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ ছিরিকোটির সুযোগ্য পুত্র মাদারজাত অলি গাউসে জামান, সুলতানুল আউলিয়া আল্লামা হাফেজ ক্বারি সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহঃ ) অনেক বার মাইজভাণ্ডার দরবারে গিয়েছিলেন। একবার হযরত তৈয়্যব শাহ মাইজভাণ্ডার দরবার জিয়ারত শেসে হযরত দেলোয়ার হুসেন মাইজভাণ্ডারীর রওজা জেয়ারত করে বের হতেই ওনার সামনে হযরত শাহানশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী এসে দাড়ান এবং তাকে স্বাগত জানিয়ে কুলাকুলি করেন, কথাবার্তা বলেন। ঐ দিন ফেরার পথে হযরত তৈয়্যব শাহ (রহঃ ) মন্তব্য করেন শাহান শাহ বেশক শাহান শাহ হ্যায়।
চট্টগ্রামে তৈয়্যব শাহার শেষ সফর কালে ও হুজুর কেবলা মাইজভাণ্ডার শরিফ গিয়ে শেষ বারের মত জেয়ারত ও সালাম জানিয়ে এসেছিলেন।
## একই দারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন আওলাদে রাসুল গাউসে জামান হুজুর কেবলা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
আল্লামা তাহের শাহ ১৯৯৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর মাইজভাণ্ডার দরবার জিয়ারত করেন।
তার জিয়ারত নিঃসন্দেহে একটা ঐতিহাসিক ব্যাপার। হুজুর কেবলা আল্লামা তাহের শাহ মাইজভাণ্ডারের সব মাজার জিয়ারতের পর যান শাহানশাহ সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর মাজারে। হুজুর কেবলা তিন দফা মাজার ব্যস্টনির অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন, এবং গভীর স্রদ্ধা ও আদবের সাথে মাজার জিয়ারত ও মোনাজাত করেন।
এর পর মাজার প্রদর্শনী বইতে লিখেন সেই ঐতিহাসিক বানী ঃ
আল্লাহ ও রাসুলের প্রসংশায় অতঃপর -
আমি নগন্য মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফ দেখলাম।
মাজারে শায়িত প্রত্যেক ছাহেবই এক এক জন বেলায়তের শাহান শাহ, এবং মাজার থেকে পরিপুরন ফয়েজ প্রাপ্তি ঘটে।
প্রত্যেকই আল্লাহর মনোনিত এবং তারা যা বলে তা অনায়াসে গ্রিহিত হয়।
আল্লাহতায়ালা প্রত্যেককে জিয়ারতের সৌভাগ্যদিন আমিন।
নগন্য
সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ
২৫-১২-৯৫ ইং
No comments:
Post a Comment