Saturday, September 15, 2018

হজরত অছিয়র রহমান ফারুকী চরণদ্বীপি (ক)

কারামতে শাহে চরণদ্বীপি (ক)

মওলানা আবদুর রহমান ফকির আল্লামা শাহ অছিয়র রহমান আল ফারুকীর ফয়েজপ্রাপ্ত খলিফা ছিলেন।।
তিনি বর্ণণা করেন:-
একদা বর্ষাকালের রাতে মওলানা চরণদ্বীপি তাঁর গদী শরীফে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বসে আছেন।
এমন সময় গোমদন্ডী হতে ফকির মুন্সি মিয়া, আমিন উল্লাহ, সরোয়াতলি হতে মৌলবি নূর আহমদ, কধুরখীল হতে ছলিম উল্লাহ, মওলানা নূর উদ্দিন, পশ্চিম চরণদ্বীপ হতে আহছান উল্লাহ ও নাদেরুজ্জামান সওদাগর এসে মওলানা চরণদ্বীপির সামনে উপস্থিত হলেন।
বৃষ্টি বাদলের দিনে গভীর রাতে ভিন্ন ভিন্ন গ্রাম থেকে তাদের আসার কারণ জানতে চাইলে মুন্সি মিয়া  বলেন:- আমরা বাবাজান কেবলার অন্বেষনে দরবারে আসেছি। বাবাজান কেবলা রাতে আমার ঘরের দরজায় গিয়ে আমাকে ডেকে বলেন
 " মুন্সি মিয়া আল্লাহর জিকির করতে থাক।গাফেল হয়ে থাকিওনা।  ঘুমের সময় সামনে আছে।"
তখন আমার সামান্য ঘুম আসছিল।
হঠাৎ বাবাজান কেবলার মধুর স্বরের আওয়াজ শুনে তাড়াতাড়ি ঘরের বাইরে আসে দেখি বাবাজান কেবলার কোন সাড়া শব্দ নাই।
তখন মনে মনে ভাবলাম বৃষ্টি বাদলের দিন। পথ ঘাট কাদা মাক্ত গাড় অন্ধকার রাত ৩/৪ মাইল পথ অথিক্রম করে  বৃদ্ধ অবস্থায় বাবাজান কেবলা কি করে আমার বাড়িতে আসলেন। আবার কি ভাবে বাড়িতে যাবেন।
সুতরাং তাঁর তালাশে বাড়ি থেকে কিছু দূরে এসে আমিন উল্লাহ মিয়ার দেখা পেলাম।
তাকেও নাকি বাবাজান কেবলা সজাগ করে দিয়েছেন। তিনিও নাকি বাবাজান কেবলার সন্ধানে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন।
আমরা উভয়ে মুন্সির হাট পর্যন্ত আসলে সরোয়াতলী গ্রামের নূর আহমদ ও মক্তল হোসেনের সাথে দেখা হয়।তারাও নাকি একই ঘটনাই চরণদ্বীপ বাবাজানের তালাশে বের হয়েছে।
আমরা সকলেই একত্রে  দরবারে এসে পৌঁছি। তখন সকলেই একি ঘটনা বর্ণণা করলেন।
তারা বুঝতে পারলনা এই ঝড় বৃষ্টির রাতে বাবাজান কিভাবে এতদূরের এতগুলো ভক্তদের বাড়িতে  একত্রে গেলেন।

তখন আবদুর রহমান ফকির তাদেরকে বলেন "চরণদ্বীপি বাবাজান অসুস্থ অবস্থায় আছেন। বাইরে যাওয়ার সাধ্য তার নাই।আজ রাতে বাবাজান তাঁর হুজরা থেকে বের হননি। "

তখন তারা বুঝতে পারল বাবাজান তার বেলায়তি শক্তিতে তাদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সজাগ করলেন।


______________________________________

চরণদ্বীপ নিবাসী হযরত মৌলানা ছৈয়দ মনিরুল ইসলাম  (রঃ) হতে বর্ণিত,
কধুরখীল নিবাসি মৌলানা ছৈয়দ মোহাম্মদ
ইসমাইল (রঃ) বলিয়াছেন,তিনি বহু বৎসর হিন্দুস্থানে ছিলেন।
দেশে আসিয়া হযরত মৌলানা অছিউর রহমান ফারুকী (কঃ)'র খেদমতে উপস্থিত হইয়া তাঁহার কশ্-ফ কেরামত ও বেলায়তে
বিশ্বাস স্থাপন পূর্বক তাঁহার নিকট বায়াত হওয়ার প্রার্থনা করিলেন।
হযরত মৌলানা অছিউর রহমান ফারুকী(কঃ)চাহেব কেবলা তাঁহাকে মাইজভান্ডার দরবার শরীফ হযরত গাউসুল আযম হযরত কেবলায়ে আলম (কঃ)'র খেদমতে যাওয়ার জন্য আদেশ করেন।

হযরত মৌলানা ইসমাইল (রঃ) তাঁহার আদেশ পাইয়া হযরত কেবলা আলম (কঃ)'র খেদমতে হাজির হইয়া বায়াত হওয়ার আর্জী আরজ করেন।

 গাউসুল আযম হযরত কেবলায়ে আলম (কঃ) তাঁহাকে বলেন- মিঞা তুমি হযরত আলী (কঃ) এর নিকট যাও। তোমার নিয়ামত খলিফায়ে উলল আজম এর হাতে
রহিয়াছে।
হযরত কেবলায়ে আলমের বাক্যের মর্ম উপলব্দী করিতে না পারিয়া পুনরায় আরজ করিলেন,হুজুর? হজরত আলী (কঃ) কে আমি কোথায় পাইব? হজরত কেবলায়ে আলম (কঃ) পুনরায় বলেন - মিঞা চরণদ্বীপে আমি একখানা মসজিদ দিয়াছি,সোই মসজিদে নামাজ পড়িলে হজরত আলী (কঃ) কে পাইবে। হযরত ইসমাইল (রঃ) হজরত কেবলায়ে আলমের খেদমৎ হতে বিদায়  গ্রহণ পূর্বক বাড়ীতে আসেন এবং হযরত মৌলানা অছিউর রহমান ফারুকী (কঃ)'র খেদমতে হাজির
হইয়া বায়াত গ্রহণ করেন।

______________________________________

চরণদ্বীপ নিবাসী ডাক্তার মৌলভী আবদুল মজিদ ফারুকী রঃ বর্ণনা করেন?

সাতকানিয়া থানার অন্তর্গত পদুয়া  গ্রামের পেটান শাহ ফকির মাদারজাত অলি ছিলেন। তিনি কাস্ ফের প্রভাবে জানিতে পারিলেন যে, জামানার গাউছুল আজমের তাওয়াজ্জোহ লাভ করা একান্ত আবশ্যক।একদা তিনি মাইজভান্ডার দরবার শরীপ হযরত গাউসে পাকের খেদমতে হাজির হইলেন।হজরত আকদছ (কঃ) তাহাকে এক চামচ শরবত পান করাইয়া বলেন- চরনদ্বীপে আমি প্রেমের বাজার বসাইয়াছি,আমার সেই বাজারে যাইয়া একটি রসগোল্লা  খাইয়া চলিয়া যাও।

অতঃ পর হযরত আকদছ( কঃ)কেবলার খেদমতে হইতে বিদায় গ্রহণ করতঃ যথাসময়ে চরণদ্বীপ মৌলানায় আকদচ (কঃ) এর খেদমতে উপস্তিত হইলেন।মৌলানায় আকদচ তাহার প্রতি দৃস্টিপাত করতঃ একটি রসগোল্লা খাওয়াইয়া দিলেন।মুহুর্তের মধ্যে তাঁহার জজবা গালেব হয়।তিনি প্রকৃতিস্থ হইলে মৌলানায় আকদছ কঃ) তাঁহাকে বলেন - মিঞা পেটান আলী
চাঁন্দার হাটে গিয়া একটু বিশ্রাম করিয়া তৎপর নিজ গৃহে যাইয়া আল্লাহর ধ্যানে বসিয়া থাক"। মৌলানায় আকদচ (কঃ) এর আদেশক্রমে তিনি চাঁন্দার হাটে একটি দোকানে যাইয়া উপবেশন করিলেন ইহাতে
তাঁহার প্রতি সর্বসাধনের ভক্তি শ্রদ্ধার উদ্রেগ হয়।তিনি বহু টাকা পয়সা নজরানা স্বরূপ প্রাপ্ত হন।তৎপর নিজ বাড়ীতে যাইয়া গদীনশীন হন।

______________________________________

No comments:

Post a Comment